Monday, October 24, 2016

প্রশ্নঃ- হযরত মুহাম্মদের সাথে কাল্কি অবতারের পার্থক্য কি ?




প্রশ্নঃ- হযরত মুহাম্মদের সাথে কাল্কি অবতারের পার্থক্য কি ?

উত্তরঃ পাকিস্তান আমলে একবার হঠাৎ শোনা গেলো কুরআন শরীফে নবীজির দাড়ি মোবারক পাওয়া যাচ্ছে! সাধারণ বিশ্বাসী মুসলমান ওযু করে বিসমিল্লাহ বলতে বলতে কুরআনের পৃষ্ঠা খুলতে লাগলো হঠাৎ দেখতে পায় ভেতরের ভাঁজে মেহেদী রাঙানো একটা দাড়ির মত চুল! মানুষের সেই পশমে চুমু খেতে খেতে অজ্ঞান হওয়ার দশা। আবার ১০-১২ বছর আগে ঠিক এরকম একটা ঘটনা যেটা হিন্দু অধ্যুষিত একটা পাড়ায় সেখানে মহিলাদের মধ্যে খুব চাঞ্চল্য দেখা গেলো। গীতাতে নাকি লোকনাথ বাবার দাড়ি পাওয়া যাচ্ছে! তারা ধর্মের প্রসারের, ধর্মের প্রতি মানুষের প্রবল অনুরাগ বাড়াতেই এই মিথ্যাচারের আশ্রয় নেন। ইসলামের পরিভাষায় একে “তাকিয়া” বলা হয়ে থাকে। জাকির নায়েক থেকে শুরু করে মুহাম্মদ কাসিম নানোত্বি, মীর্জা গুলামের মত ইসলামিক পণ্ডিতরা সবাই “তাকিয়ার” আশ্রয় নিয়ে মিথ্যাচার করেন কোন রকম অনুতাপ ছাড়াই। কারণ এরকম মিথ্যাচার ইসলাম ধর্মে বৈধ। কুরআনে নবীজির দাড়ি পাওয়া যাচ্ছে, বা গীতায় লোকনাথের দাড়ি পাওয়া যাচ্ছে! যদি পঞ্চাশ জন মানুষও সেটা খুঁজে পান তো গোটা দেশে সেই হিউমার ছড়াতে সময় লাগবে ২৪ ঘন্টা। আর আজকের মোবাইলের যুগে কয়েক ঘন্টা মাত্র। জাকির নায়েক “বেদে” হযরত মুহাম্মদের আগমনের বার্তা খুঁজে বের করতে পারলেও কিন্তু তার নবী মুহাম্মদ তাওরাতে নিজের নামখানা বের করে দেখাতে পারেননি। হযরত মুহাম্মদ তাওরাতে উনার আগমনি বার্তাকে প্রমাণ করতে না পেরে বলেছিলেন ইহুদীরা সেকথা জেনেশুনে মুছে ফেলেছে। তবে উনার “কল্কি শিষ্য” জাকির নায়েক গুরুর থেকেও মহা ঘুঘু মাল! এই লোক একদম প্রমাণই করে ফেলেছে তার নবীর নাম হিন্দুদের ধর্মীয় কিতাবে লেখা আছে! কৌতূহল জাগতে পারে হিন্দু “বেদে” কি মুহাম্মদ ও তার বাবা-মার নামধাম সহ কিছু উল্লেখ আছে? ভাবলে অবাক লাগে, একজন মানুষ কত বড় মাথামোটা হলে হিন্দু ধর্মে হযরত মুহাম্মদকে আবিষ্কার করতে পারেন! কয়েক হাজার বছর আগে যদি বেদে মুহাম্মদের কথা বলাই থাকবে তাহলে বেদের ঋষিদের পৌত্তলিকতা জারি থাকে কিভাবে? সেমিটিক ও প্যাগণ ধর্ম দুই পৃথিবীর বাসিন্দা। মুহাম্মদ জাতে মাতাল হলেও তালে ঠিক ছিল বলে নিজেকে সেমিটিক ধর্মের নবী দাবী করে প্যাগন ধর্মে নিজের ভবিষ্যত বার্তা দাবী করেননি, করেছেন সেমিটিক ইহুদী ধর্মে। কিন্তু “কল্কি শিষ্য” জাকির নায়েক বেহেড মাতালই বলতে হবে। আসুন দেখি তার মাতলামীর নমুনা।
জাকির নায়েক তার একটা লেকচারে হিন্দু ধর্মে হযরত মুহাম্মদের আগমনি বার্তার প্রমাণ দেখাতে গিয়ে বলেছিলেনএতস্মিন্নন্তিবে সেত্দচ্ছ আচার্যেন সমন্বিতঃ। মহামদ ইতিখ্যাতঃ শিষ্যশাখা সমন্বিত।। নৃপশ্চৈব মহাদেবং মরুস্থ নিবাসিম্ম। চন্দনাদিভির ভ্যর্চ্য তুষ্টাব মনসাহরম্নমস্তে গিরি জানাথ মরুস্থল নিবাসিনে। ক্রিপুবাসুরনাশায় বহুমায়া প্রবর্তিনে॥" (ভবিষ্যপুরাণ ৩:৩:৩)//
// "তম্মান্মুসলবন্তো হি জাতয়ো ধর্ম্ম দূষকাঃ। ইতি পৈশাচধমশ্চ ভবিষ্যতি ময়াকৃতঃ। ” (ভবিষ্যপুরাণ: শ্লোক, ১০-২৭)
অর্থ্যাৎ, ত্রিপুরাসুর নামে একজন আসবেন। মুহামদ নামে জন্ম নেবে ও একটা আসুরী ধর্ম প্রচার করবে। এই ধর্মের অনুসারীদের মুসলমান বলা হবে। তারা মাংস ভক্ষক হবে। মাথায় শিখার বদলে তারা দাঁড়ি রাখবে। তারা লিঙ্গ কর্তন করবে। তাছাড়া কোন ঈমানদার বান্দা কি ইসলাম ধর্মকে “অসুরের ধর্ম” বলে মেনে নিবেন? তাহলে ভবিষ্য পুরাণে কোথায় হযরত মুহাম্মদের কথা বলা হয়েছে? হযরত মুহাম্মদ স্বয়ং কি কোনদিন বলেছেন যে ভারতের ধর্মীয় গ্রন্থে উনার কথা বলা আছে? সবচেয়ে বড় কথা ভবিষ্য পুরাণে কথিত এই মুহাম্মদকে নিচ, পিশাচ, পাপী, অধর্ম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে! ভবিষ্য পুরাণের এই দাবীকে সত্য ধরলে ইসলাম ধর্মকে শয়তানের ধর্ম ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় না। টাউট জাকির নায়েক সাধারণ হিন্দুদের মনে ধাক্কা দিতে ও সাধারণ মুসলিমদের আমোদ দিতে ভবিষ্যপুরানের প্রায় সকলের অগোচড়ে থাকা এই বিষয়টি আলোচনায় নিয়ে এসেছে যেখানে মুহাম্মদকে একটা পাপাত্মা বলে পরিচয় করে দেয়া হচ্ছে। ইন্টারনেটে সার্চ করে এ সম্পর্কে যতগুলি লেখা পেলাম, দুই পক্ষে কাঁদা ছুড়াছুড়ির মাঝে জাকির নায়েকের অনুসারীদের মিথ্যাচার স্পষ্ট। হযরত মুহাম্মদ তাওরাতে নিজের নাম খুঁজে না পেয়ে শেষে যে আশ্রয় নিয়েছিলেন (ইহুদীরা তাওরাত বিকৃত করে ফেলেছে) এখানেও দেখলাম অনেকে বলার চেষ্টা করেছেন পুরাণকে বিকৃত করে ফেলা হয়েছে! তবু জাকির নায়েক কল্কি পুরানে কল্কির সঙ্গে হযরত মুহাম্মদের মিল খুঁজে পেয়েছে! হিন্দু ধর্মেরও অনেক বাবাজি নিজেকে কল্কি পুরাণের কল্কি বলে নিজেকে দাবী করেছেন। আরো করবেন সামনে। কারণ এই পুরাণের সঙ্গে এক-দুই ভাগ যে কোন মানুষের সঙ্গে মিলে যাবে। আর চাপাবাজ শিষ্যরা থাকলে সেটাকেই আকাশে তুলে দিবে। জাকির কল্কিপুরাণের কল্কিকে নবী মুহাম্মদ বলে দাবী করেছেন অথচ বর্ণিত কল্কির সঙ্গে তার কোন মিলই পাওয়া যায় না! কোন কোন ক্ষেত্রে শব্দের অর্থকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
আসুন দেখি মহম্মদের সাথে কল্কির কেমন মিল আছে,
কল্কি অবতার এর পিতা মারা যাবে তার জন্মের পর (কাল্কি পুরানা ১.২.১৫ )
হযরত মুহাম্মদের বাবা মারা যান তার জন্মের পূর্বে!  
বিসমিল্লাতেই ধরা!
কল্কি তার মাতা সুমতির ৪র্থ সন্তান রুপে পৃথিবীতে আসবেন (কল্কি পুরান ২.৩১ ) 
"হযরত মুহাম্মদ গর্ভে থাকাকালে তার পিতার মৃত্যু হয়েছিল তাই সঙ্গত কারণেই তার আর কোন ভাই-বোনের জন্ম হবার কথা নয়। তার মাতা আমিনা আবার বিয়ে করেছেন এমন কোন তথ্য আমাদের জানা নেই।
“তিনি জন্ম নিবেন মাসের এক ১২ তারিখে” (কল্কি পুরান ২.১৫)
হযরত মুহাম্মদের ১২ রবিউল আওয়াল জন্মেছেন কোন প্রমাণ ইসলামের কোন সূত্রে পাওয়া যায় না। কোন আলেম বা বিশেষজ্ঞ এবিষয়ে একমতও নন। তবে ১২ তারিখকে ধরে নেয়া হয়।
কল্কির বাবার নাম হবে “বিষ্ণুযশ” যার অর্থ হবে "ঈশ্বরের গর্ব"। জাকির নায়েক দাবী করেছেন কল্কি নাম নাকি লেখা আছে বিষ্ণুইয়াসি যার অর্থ সৃষ্টিকর্তার গোলাম। এর সঙ্গে মুহাম্মদের বাবার নাম আবদুল্লাহ (আল্লার দাস) মিলিয়েছেন। হিন্দু পন্ডিতদের চেয়ে জাকির নায়েক সংস্কৃত বেশি বুঝবেন আর জাকির মিয়ার চাইতে কোন হিন্দু পন্ডিত কুরআন আর আরবি বেশি বুঝবেন সেটা হাস্যকর। কাজেই জাকির নায়েক এই জায়গায় “তাকিয়া” খেলেছেন সংগতভাবেই। আবার ২০০৮ সংস্কৃত সভায় নাকি একটা সংঘ এই বিষয়ে বিতর্কের আমন্ত্রণে জাকির নায়েক কোন সাড়া দেননি! কল্কির মায়ের নাম হবে সুমতি। এটাকে জাকির নায়েক আরবী আমেনা বানিয়েছেন। আমেনা অর্থ শান্ত আত্মা। আগেই বলেছি জাকির সংস্কৃত ভালো জানেন।
“কল্কিকে তার গুরু রামদেব বেদ শেখাবেন” (কল্কি পুরান ৩.৪৩)
হযরত মুহাম্মদ বেদ জানতেন এটা কোন হাদিসে এসেছে ? মুসলিমরা তো গর্ব করে বলে উনি মূর্খ ছিলেন! আর তার রামদেব নামে কোনও শিক্ষকও ছিলও তাওতো শুনিনি।
“কল্কি অবতার সব খারাপ লোকদের ধ্বংস করে যখন স্বর্গে ফেরত যাবেন। তারপর আবার সত্য যুগ শুরু হবে।’ (অগ্নি পুরান ১৬.১০)
এখানেও মহম্মদ ধরা। এখন সত্য যুগ শুরু হয়েছে ? যে যুগে মিথ্যা, ধোঁকা, খুন করা ডাকাতি করা নিত্তান্ত ব্যাপার এটাকে এখন সত্য যুগও মানতে হবে হাসি থামাতে পারছি না আর...।
সবাই জানে এখনও কলি যুগ চলছে। শুধু পাপের সম্রাজ্জ চলছে।
“কল্কি ও তার স্ত্রী নিরামিষভোজী হবেন।“ (কল্কি পুরান ৩.৪৩)
হযরত মুহাম্মদ নিরামিষ ভোজি ছিলেন এমনটা তার শত্রুও বলতে পারবে না! উনার প্রিয় ছিল বকরির ঠাংয়ের রোস্ট। এই ঠ্যাং খেতে গিয়েই বিষক্রীয়ায় শেষ পর্যন্ত মারা গিয়েছিলেন এই আলোচিত-সমালোচিত ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ।
কেন এই মিথ্যাচার? হযরত মুহাম্মদ নিজে তাওরাতকে বিকৃত করে ফেলা হয়েছে- এরকম অপ্রমাণিত উক্তি করে চরম ধর্মানুভূতিতে আঘাত করেছেন সমস্ত ইহুদী-খ্রিস্টানদের। তার এই উক্তি, তার কুরআনের এই ভাষ্য আজো পৃথিবীতে এই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সংঘাত, দ্বন্ড, অবিশ্বাস, ঘৃণা, বিদ্বেষ জারি রেখেছে। এটি পৃথিবী ইতিহাসে সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল উক্তি।
ধর্মের এই আরোপিত বিতর্ক বিভক্ত পৃথিবীকে আরো বিভক্তই করবে। জাকির নায়েকদের ধর্মীয় অধিকার কতটুকু সেটা এখনি নির্ধারণ করে না দিলে সামনের পৃথিবীতে ধর্মীয় সংঘাত আরো বাড়বে। এদের মুখোশ তাই প্রতিনিয়ত খুলে দিতে হবে। মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে।
sothikdhormo.blogspot.com

No comments:

Post a Comment

যে কোনও প্রশ্ন করতে পারেন আমাদের কাছে