প্রস্নঃ পুনর্জন্ম কি আর আমাদের কি পুনর্জন্ম হয় ?
উত্তরঃ অনেক মানুষের মনেই প্রশ্ন
পুনর্জন্ম কি। আসলে আমরা শরীর না আত্মা। এই আত্মা শরীরে থাকার নাম জীবিত আর বেড়িয়ে
গেলে সে মৃত। মানুষের আত্মা আছে সব ধর্মেই মানে। গীতা বলা আছে আত্মা, কোরআনে বলে
রুহ আর বাইবেল বলে সউল। এক এক ধর্মে এর এক এক নাম দিয়েছে। কিন্তু পৃথিবীতে যত
ধর্মই আছে তার বেশির ভাগই ধর্মেই পুনর্জন্মে বিশ্বাসী। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ এমনকি
এখন পৃথিবীতে যে খ্রিস্টান ধর্মের লোকেদের সংখ্যায় বেশি তারাও পুনজন্মে বিশ্বাসী। কারন,
যিশু মরে যাবার পরেও ফেরত আসবেন এ কথা বাইবেলে বলা আছে তাই তারাও পুনজন্মে
বিশ্বাসী। আমারিকাতে ১৯৮৫ সালে পুনর্জন্ম
বিশ্বাস করতো শুধু ১৫% লোক। তারপর ১৯৯৬ তে ২২% এসে
দাড়ায়। আজ বর্তমানে ২০১৬ তে ৫০% এরও বেশি লোক তারা বিশ্বাস করে যে পুনর্জন্ম আছে। Dr. Ian Stevenson’s যিনি কানাডায় ১৯১৮ অক্টোবরের ৩১ তারিখে জন্ম
গ্রহন করেন। তিনি ছিলেন খ্রিস্টান পরিবার থেকে। ১৯৬৭ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনি পুনর্জন্ম
নিয়ে রিসার্চ করেছেন। তিনি পৃথিবী ঘুরে ৩০০০ হাজারেরও বেশি পুনর্জন্মের ঘটনা
সংগ্রহ করেছেন। সেই ঘটনা গুলোর ওপর ২০ টির ও বেশি বই লিখেছেন তিনি। Twenty
Cases Suggestive of Reincarnation, Where Reincarnation and Biology Intersect, European Cases of the
Reincarnation Type, Children
Who Remember Previous Lives: A Question of Reincarnation, Science, the Self, and Survival
after Death: Selected Writings of Ian Stevenson এমন আরও আরও অনেক বই তিনি লিখেছেন আপনারা চাইলে নেটে গিয়ে PDF
ফাইল ডওনলোড করে পড়তে পারেন। Dr. Ian Stevenson’s তিনিও
সত্যতা পাওয়ার পরে পুনর্জন্মে বিশ্বাস করেছেন। মুসলিমরা পুনর্জন্মে বিশ্বাসী না
কিন্তু কোরআনে স্পট পুনর্জন্ম সম্পর্কে বলা আছে। যদি পড়েন ২ সূরা আল-বাক্কারাহ
আয়াত ২৮ সেখানে লেখা আছে
كَيْفَ
تَكْفُرُونَ بِاللَّهِ وَكُنتُمْ أَمْوَاتاً فَأَحْيَاكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ
ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
যার ইংরেজি অর্থ, How can ye reject the faith
in Allah?- seeing that ye were without life, and He gave you life; then will He
cause you to die, and will again bring you to life; and again to Him will ye
return.
বাংলা অর্থ,
কেমন করে তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে কুফরী অবলম্বন করছ? অথচ তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণ।
অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে প্রাণ দান করেছেন, আবার
মৃত্যু দান
করবেন। পুনরায় তোমাদেরকে জীবনদান করবেন।
অতঃপর তারই কাছে ফেরত নেবে।
|
এখানে মুসলিম ভাইয়েরা বলে, না না না এটা
কেয়ামতের ময়দানে জীবিত করবে সেই কথা বলা। আচ্ছা সেই কথাই যদি বলা হয়ে থাকে। তাহলে
তো পরের বার জীবিত করে তার কাছে ফেরত নেবে বললও কেনও ? এখানে বলতো, আবার জীবিত করে
হিসাব নেবো। ফেরত বলা আছে এই কারনে, কারন তাকে আবার পৃথিবীতে পাঠানো হবে সুযোগ
দেবে জীবনের পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য। যাই হক তাদের কথা ছাড়ি তারা মানতে
চাইবে না।
নিচে কিছু পুনজন্ম ঘটনা দেয়া হলঃ
১
নাম্বার ঘটনাঃ ১৯৫৭ সালে একটি ঘটনা পুনর্জন্মের বাস্তবতাকে অবিশ্বাস্য পর্যায়ে
নামিয়ে আনে।
১১ বছরের জোয়ানা আর ৬ বছরের জ্যাকুলিন পোলোক দুই বোন মর্মান্তিক এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। এই দুই কন্যা মারা
যাওয়ার পরবর্তী বছর তাদের মা জমজ সন্তান জন্ম দেন। সবাই অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করে এই জমজ সন্তান দুটি
পূর্বে গাড়ি
দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া সন্তানদুটির চেহারা, আচরণ এমনকি হুবুহু জন্মদাগও মিলে যায়! এরপর একের পর এক অবিশ্বাস্য
ঘটনা ঘটায় তারা। মৃত দুই বোন যে খেলনা দিয়ে খেলত তারা সেটা নিয়েই খেলতে চাইত। জোয়ানা আর জ্যাকুলিন পোলোক যেখানে Accident
হয়ে মারা
গিয়েছিলো তারাও সেই স্থান দেখে ভয় পেতো। যেখানে তারা বেড়াতে যেতে পছন্দ করত তারাও সেখানে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বায়না
করত। অথচ তাদের আগে কখনো সেখানে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া হয়নি!
২
নাম্বার ঘটনাঃ ইন্ডিয়ার শান্তি দেবীর ১১ ডিসেম্বর, ১৯২৬ সালে ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন।
শান্তি
দেবী মাত্র চার বছর বয়সে তাঁর বাবা-মাকে বলেন যে, তাঁর আসল বাড়ি মথুরাতে এবং সেখানে তাঁর স্বামী বাস করেন, যা তাঁদের বাড়ি দিল্লি থেকে ১৪৫ কিমি দূরে অবস্থিত। ছয় বছর
বয়সেই তিনি মথুরায় পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে পালান বাড়ি ফিরে, তিনি স্কুলে বলেন যে, তিনি বিবাহিতা এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার
দশদিন পর তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। শিক্ষকদের সাথে আলাপচারিতায় শান্তি মথুরার
কথ্যভাষা ব্যবহার করতেন এবং নিজের ব্যবসায়ী স্বামীর নাম 'কেদারনাথ' বলে উল্লেখ করতেন। স্কুলের প্রধান
শিক্ষক মথুরাতে
গিয়ে ঐ নামে এক ব্যবসায়ীকে খুঁজে বার করেন, যার স্ত্রী লগডি দেবী, ন'বছর আগে একটি পুত্রসন্তান জন্ম দেওয়ার
দশদিন পর মারা গিয়েছিলেন। কেদারনাথ দিল্লিতে পৌছালে শান্তি তাকে ও তাঁর ছেলেকে তৎক্ষণাৎ চিনতে
পারেন। শান্তি
দেবী কেদারনাথের দাম্পত্য জীবনের নানা খুঁটিনাটির বর্ণনা দিলে কেদারনাথ তাকে লগডি দেবীর 'পুনর্জন্ম' হিসেবে মেনে নেন।ঘটনাটি মহাত্মা গান্ধীর নজরে আনা হলে তিনি শান্তির
সঙ্গে দেখা করেন এবং তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠন করেন। কমিশন ১৯৩৫ সালের ১৫ই নভেম্বর শান্তি দেবীকে নিয়ে
মথুরা
যায়। সেখানে
শান্তি লগডি দেবীর দাদু তথা পরিবারের আত্মীয়দের শনাক্ত করেন।
ডক্টর ইয়ান স্টিভেনসন ইমাদ ও তার বাবা-মা’র সাথে কথা বলেন, শুরু করেন ঘটনার তদন্ত। ইমাদ, তার বাবা-মা ও স্টিভেনসন সেই গ্রামে গেলেন যেটা নিয়ে ইমাদ আগে কথা বলেছিল। সে বাড়িটি খুঁজে পাওয়া গেল যেটা ইমাদের দাবি অনুসারে তার পূর্ব জন্মের বাসস্থান ছিল। এরকম ১৩ টি নিদর্শন পাওয়া গেল যেগুলো নির্ভূল বলে প্রমাণিত হলো। ইমাদ ঐ বাড়িতে পাওয়া বিভিন্ন ছবি দেখে তার পূর্ব জন্মের চাচা মাহমুদ ও প্রেমিকা জামিলেহকে চিনতে পারে। ইমাদের ৫৭ টি দাবির মাঝে ৫১ টি প্রমাণিত হয়।
৪ নাম্বার ঘটনাঃ স্টিভ জবসের মৃত্যুর পর অ্যাপল’র একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার টনি সিউং থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি দলের কাছে এটা জানতে চেয়ে একটি ইমেইল পাঠালেন যে, মৃত্যুর পর স্টিভ জবস কেমন আছেন এবং অত্যন্ত অস্বাভাবিকভাবে সেই ইমেইলের উত্তরও পেয়ে যান তিনি। এতে লেখা হয়, মৃত্যুর পর জবস এখন স্বর্গের একজন দার্শনিক ও ক্যালিফোর্নিয়ায় অ্যাপল হেডকোয়ার্টারের ঠিক ওপরেই স্বর্গে একটি কাঁচের প্রাসাদে বসবাস করছেন। মালয়েশিয়াতে জবসের ভক্তরা তার মৃত্যুর পর এক অদ্ভুত অনুষ্ঠান পালন করেন। তারা প্রত্যেকেই একটি একটি আপেল নিয়ে তাতে এক কামড় দেন ও বাকি আপেলটুকু সজোরে নিক্ষেপ করেন সমুদ্রে। তাদের বিশ্বাস ছিল এর ফলে জবসের পুনর্জীবন লাভ দ্রুত হবে। ধাম্মাকায়া মন্দিরের পুরোহিত ‘Phra Chaibul Dhammajayo’ নিশ্চিত যে, জবস পুনর্জন্ম নিয়েছেন ও শিল্প-বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে তার আগ্রহ আছে। শুধু তাই নয়, এটাও বলা হয় তার অনুসারীদের সাথে তিনি বিশেষ ব্যবস্থায় যোগাযোগ করেণ!
পুনর্জন্ম হয় এটা নিশ্চিত। এর অনেক প্রমান আছে, এমন অনেক ঘটনা আছে পুনর্জন্মের। শুধু মুসলিম মতাবলম্বিরা এটা মানতে অস্বীকার করে। কিন্তু পুনর্জন্ম হয় এটা নিশ্চিত।
sothikdhormo.blogspot.com
No comments:
Post a Comment
যে কোনও প্রশ্ন করতে পারেন আমাদের কাছে